প্রেরিতদের কার্যবিবরণ ৩:১-২৬

  • পিতর একজন ভিক্ষুককে সুস্থ করেন, যে খোঁড়া ছিল (১-১০)

  • দু-দিকে স্তম্ভবিশিষ্ট শলোমনের বারান্দায় পিতরের বক্তৃতা (১১-২৬)

    • ‘সমস্ত বিষয়ের পুনর্স্থাপন’ (২১)

    • মোশির মতো একজন ভাববাদী (২২)

৩  পিতর ও যোহন নবম ঘণ্টার* প্রার্থনার জন্য মন্দিরে যাচ্ছিলেন, ২  এমন সময় লোকেরা এক ব্যক্তিকে বহন করে নিয়ে এল, যে জন্ম থেকে খোঁড়া। প্রতিদিন তারা তাকে মন্দিরের সুন্দর নামক দরজার কাছে রেখে যেত, যাতে যারা মন্দিরে প্রবেশ করত, তাদের কাছ থেকে সে ভিক্ষা চাইতে পারে। ৩  আর সে পিতর ও যোহনকে মন্দিরে প্রবেশ করতে দেখে তাদের কাছে ভিক্ষা চাইতে লাগল। ৪  কিন্তু, পিতর ও যোহন সোজা তার দিকে তাকালেন; আর পিতর তাকে বললেন: “আমাদের দিকে তাকাও।” ৫  তখন সেই ব্যক্তি তাদের কাছ থেকে কিছু পাওয়ার আশায় তাদের দিকে তাকিয়ে রইল। ৬  কিন্তু, পিতর বললেন: “আমার কাছে সোনা কিংবা রুপো নেই, তবে আমার কাছে যা আছে, তোমাকে তা-ই দিচ্ছি। নাসরতীয় যিশু খ্রিস্টের নামে ওঠো এবং হেঁটে বেড়াও!” ৭  এই কথা বলে তিনি তার ডান হাত ধরে তাকে ওঠালেন। আর সঙ্গেসঙ্গে সেই ব্যক্তির পা ও গোড়ালি সবল হল; ৮  আর সে লাফ দিয়ে উঠে হেঁটে বেড়াতে লাগল এবং হেঁটে বেড়াতে বেড়াতে, লাফ দিতে দিতে আর সেইসঙ্গে ঈশ্বরের প্রশংসা করতে করতে তাদের সঙ্গে মন্দিরে গেল। ৯  আর সমস্ত লোক তাকে হেঁটে বেড়াতে এবং ঈশ্বরের প্রশংসা করতে দেখল। ১০  তারা তাকে চিনতে পারল যে, এ সেই ব্যক্তি, যে মন্দিরের সুন্দরদ্বারে বসে ভিক্ষা করত; আর তার প্রতি যা ঘটেছে, তা দেখে তারা অত্যন্ত আশ্চর্য হল। ১১  সেই ব্যক্তি পিতর ও যোহনের হাত ধরে রেখেছিল আর লোকেরা অত্যন্ত আশ্চর্য হয়ে একসঙ্গে দৌড়ে দু-দিকে স্তম্ভবিশিষ্ট শলোমনের বারান্দায় তাদের কাছে এল। ১২  পিতর তা দেখে লোকদের বললেন: “হে ইজরায়েলের লোকেরা, এই ঘটনা দেখে তোমরা কেন এত আশ্চর্য হচ্ছ? আর তোমরা কেনই-বা এইরকমটা মনে করে আমাদের দিকে তাকিয়ে রয়েছ যে, আমাদের নিজেদের ক্ষমতার কারণে কিংবা ঈশ্বরের প্রতি আমাদের ভক্তির কারণে এই ব্যক্তি হাঁটতে পারছে? ১৩  অব্রাহাম, ইস্‌হাক ও যাকোবের ঈশ্বর, আমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর তাঁর সেই দাস যিশুকে মহিমান্বিত করেছেন, যাঁকে তোমরা লোকদের হাতে তুলে দিয়েছিলে এবং যাঁকে তোমরা পীলাতের সামনে অস্বীকার করেছিলে, যদিও পীলাত তাঁকে মুক্ত করে দিতে চেয়েছিলেন। ১৪  হ্যাঁ, তোমরা সেই পবিত্র ও ধার্মিক ব্যক্তিকে অস্বীকার করেছিলে এবং তোমাদের জন্য একজন খুনিকে মুক্ত করে দিতে বলেছিলে, ১৫  কিন্তু, তোমরা জীবনের মুখ্য প্রতিনিধিকে* হত্যা করেছিলে। তবে, ঈশ্বর তাঁকে পুনরুত্থিত* করেছেন আর আমরা সেই ঘটনার সাক্ষি। ১৬  তাঁর নামে এবং তাঁর নামের প্রতি আমাদের বিশ্বাসের কারণে, এই যে ব্যক্তিকে তোমরা দেখছ এবং জান, তাকে সবল করা হয়েছে। তাঁর প্রতি আমাদের বিশ্বাস, এই ব্যক্তিকে তোমাদের সকলের সামনে পুরোপুরি সুস্থ করে তুলেছে। ১৭  আর এখন, হে ভাইয়েরা, আমি জানি তোমরা না বুঝেই সেই কাজ করেছিলে, যেমনটা তোমাদের নেতারাও করেছিলেন। ১৮  কিন্তু, খ্রিস্টকে যে কষ্ট ভোগ করতে হবে, সেই সম্বন্ধে ঈশ্বর আগে থেকেই সমস্ত ভাববাদীর মাধ্যমে যে-বিষয়গুলো জানিয়েছিলেন, সেগুলো তিনি এভাবেই পরিপূর্ণ করেছেন। ১৯  “তাই, অনুতাপ করো এবং ঈশ্বরের প্রতি ফেরো, যেন তোমাদের পাপ মুছে ফেলা হয়; এভাবে যিহোবা* প্রশান্তির সময় নিয়ে আসবেন ২০  এবং তোমাদের জন্য নিযুক্ত খ্রিস্টকে, যিশুকে পাঠাবেন। ২১  এই যিশুকে স্বর্গে থাকতে হবে, যতক্ষণ না সেই সমস্ত বিষয়ের পুনর্স্থাপনের সময় উপস্থিত হয়, যেগুলোর বিষয়ে ঈশ্বর অতীতে তাঁর বিশ্বস্ত ভাববাদীদের মাধ্যমে জানিয়েছিলেন। ২২  মোশি তো বলেছিলেন: ‘যিহোবা,* তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের জন্য তোমাদের ভাইদের মধ্য থেকে আমার মতো একজন ভাববাদীকে উৎপন্ন করবেন। তিনি তোমাদের যা বলবেন, তা তোমাদের অবশ্যই শুনতে হবে। ২৩  আর যে-ব্যক্তি সেই ভাববাদীর কথা শুনবে না, সেই ব্যক্তিকে ঈশ্বর বিনষ্ট করে দেবেন।’ ২৪  আর শমূয়েল থেকে শুরু করে সমস্ত ভাববাদীও স্পষ্টভাবে এই সময়কালের বিষয়ে ঘোষণা করেছেন। ২৫  তোমরা সেই ভাববাদীদের বংশধর এবং সেই চুক্তিরও বংশধর, যে-চুক্তি অব্রাহামকে এই কথা বলার মাধ্যমে ঈশ্বর তোমাদের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে করেছিলেন: ‘আর তোমার বংশধরের* মাধ্যমেই পৃথিবীর সমস্ত জাতি আশীর্বাদ লাভ করবে।’ ২৬  ঈশ্বর তাঁর সেই দাসকে উৎপন্ন করে প্রথমে তোমাদের কাছেই তাঁকে পাঠিয়েছেন, যেন তিনি তোমাদের প্রত্যেককে তোমাদের মন্দ কাজ থেকে ফিরিয়ে তোমাদের আশীর্বাদ করেন।”

পাদটীকাগুলো

অর্থাৎ বিকেল প্রায় ৩টে।
বা “তোমরা জীবনদানকারী মনোনীত ব্যক্তিকে।”
শব্দকোষ দেখুন।
শব্দকোষ দেখুন।
শব্দকোষ দেখুন।
আক্ষ., “বীজের।”